আমাদেরবাংলাদেশ ডেস্ক: ● জুমআর নামায ফরয ২ রাকআত। এতে ক্বিরাআত হবে জেহরী। এ নামাযে সূরা ফাতিহার পর যে কোন সূরা বা আয়াত যথানিয়মে পড়া যায়। তবুও সুন্নত হল, প্রথম রাকআতে সূরা জুমুআহ (সম্পূর্ণ) এবং দ্বিতীয় রাকআতে সূরা মুনাফিকূন (সম্পূর্ণ) পাঠ করা। (আহমাদ, মুসনাদ, মুসলিম, আবূদাঊদ, সুনান, তিরমিযী, সুনান, ইবনে মাজাহ্, সুনান) অথবা প্রথম রাকআতে সূরা জুমুআহ (সম্পূর্ণ) এবং দ্বিতীয় রাকআতে সূরা গাশিয়াহ্ পাঠ করা। (আহমাদ, মুসনাদ, মুসলিম, আবূদাঊদ, সুনান, তিরমিযী, সুনান, ইবনে মাজাহ্, সুনান) অথবা প্রথম রাকআতে সূরা আ’লা এবং দ্বিতীয় রাকআতে সূরা গাশিয়াহ্ পাঠ করা। (আহমাদ, মুসনাদ, মুসলিম, আবূদাঊদ, সুনান, তিরমিযী, সুনান, ইবনে মাজাহ্, সুনান)
জুমআর খুতবার পূর্বে ‘কাবলাল জুমুআহ’ বলে কোন নির্দিষ্ট রাকআত সুন্নত নেই। অতএব নামাযী মসজিদে এলে ‘তাহিয়্যাতুল মাসজিদ’ ২ রাকআত সুন্নত পড়ে বসে যেতে পারে এবং দুআ, দরুদ তাসবীহ- যিকর বা তেলাওয়াত করতে পারে। আবার ইচ্ছা হলে নামাযও পড়তে পারে। তবে এ নামায হবে নফল এবং অনির্দিষ্ট সংখ্যায়।
মহানবী (সাঃ) বলেন, “যে ব্যক্তি জুমআর দিন যথা নিয়মে গোসল করে, দাঁত পরিষ্কার করে, খোশবূ থাকলে তা ব্যবহার করে, তার সবচেয়ে সুন্দর পোশাক পরে, অতঃপর (মসজিদে) যায়, নামাযীদের ঘাড় ডিঙিয়ে (কাতার চিরে) আগে যায় না, অতঃপর আল্লাহর ইচ্ছানুযায়ী নামায পড়ে। তারপর ইমাম উপস্থিত হলে নীরব ও নিশ্চুপ থাকে এবং নামায শেষ না হওয়া পর্যন্ত কোন কথা বলে না, সে ব্যক্তির এ কাজ এই জুমুআহ থেকে অপর জুমআর মধ্যবর্তীকালে কৃত পাপের কাফফারা হয়ে যায়।” (আহমাদ, মুসনাদ, ইবনে মাজাহ্, সুনান,হাকেম, মুস্তাদরাক, জামে ৬০৬৬নং)
প্রকাশ থাকে যে, “প্রত্যেক আযান ও ইকামতের মাঝে নামায আছে।” (বুখারী, মুসলিম, মিশকাত ৬৬২নং) এই হাদীস দ্বারা কাবলাল জুমআর সুন্নত প্রমাণ হয় না। কারণ, বিদিত যে, জুমআর আযান ও ইকামতের মাঝে থাকে খুতবা। আর মহানবী (সাঃ)-এর যুগে পূর্বের আর একটি আযান ছিল না। আর সুন্নত প্রমাণ হলেও মুআক্কাদাহ ও নির্দিষ্ট সংখ্য ক নয়।
তদনুরুপ “এমন কোন ফরয নামায নেই, যার পূর্বে ২ রাকআত নামায নেই।” (ইবনে হিব্বান, সহীহ, ত্বাবারানীরানী, মু’জাম, সিলসিলাহ সহীহাহ, আলবানী ২৩২, জামে ৫৭৩০নং) এ হাদীস দ্বারাও জুমআর পূর্বে ২ রাকআত সুন্নত প্রমাণ হয় না। কারণ, জুমআর ফরয নামাযের পূর্বে খুতবা হয়। আর খুতবার পূর্বে ২ রাকআত নামায এ দ্বারা প্রমাণিত হয় না। (দ্র: সিলসিলাহ সহীহাহ, আলবানী ২৩২নং)
সতর্কতার বিষয় যে, ইমামের খুতবা চলাকালে কেউ মসজিদে উপস্থিত হলে তাকে সেই অবস্থায় হাল্কা করে যে ২ রাকআত পড়তে হয়, তা সুন্নাতে মুআক্কাদাহ নয়; বরং তা হল তাহিয়্যাতুল মাসজিদ।
জুমআর পর মসজিদে সুন্নত পড়লে একটু সরে গিয়ে বা কারো সাথে কোন কথা বলার পরে ৪ রাকআত নামায সুন্নাতে মুআক্কাদাহ পড়তে হয়। মহানবী (সাঃ) বলেন, “তোমাদের মধ্যে যে ব্যক্তি জুমআর পর নামায পড়ে, সে যেন ৪ রাকআত পড়ে।” (আবূদাঊদ, সুনান, তিরমিযী, সুনান, জামে ৬৪৯৯নং)
“তোমাদের মধ্যে যে ব্যক্তি জুমআর নামায পড়ে সে যেন তার পর ৪ রাকআত নামায পড়ে।” (আহমাদ, মুসনাদ, মুসলিম, নাসাঈ, সুনান, জামে ৬৪০নং)
তিনি বলেন, “তোমাদের মধ্যে যে ব্যক্তি জুমুআহ পড়ে, সে যেন তার পর কোন কথা না বলা অথবা বের হয়ে না যাওয়া পর্যন্ত কোন নামায না পড়ে।” (ত্বাবারানী, মু’জাম,সিলসিলাহ সহীহাহ, আলবানী ১৩২৯নং)
হযরত ইবনে উমার (রাঃ) কর্তৃক বর্ণিত, মহানবী (সাঃ) জুমআর নামায পড়ে বাসায় ফিরে ২ রাকআত নামায পড়তেন। (বুখারী ৯৩৭নং, মুসলিম, সুনানু আরবাআহ (আবূ দাঊদ, তিরমিযী, নাসাঈ ও ইবনে মাজাহ্))
অবশ্য যদি কেউ মসজিদে ২ রাকআত পড়ে তাও বৈধ। পরন্তু যদি কেউ ২ অথবা ৪ রাকআত বাসায় পড়ে তাহলে সেটাই উত্তম। কারণ, মহানবী (সাঃ) বলেন, “ ফরয নামায ছাড়া মানুষের শ্রেষ্ঠতম নামায হল তার স্বগৃহে পড়া নামায।” (নাসাঈ, সুনান, ইবনে খুযাইমাহ্, সহীহ, সহিহ তারগিব ৪৩৭নং, তামামুল মিন্নাহ্, আলবানী ৩৪১-৩৪২পৃ:)
প্রকাশ থাকে যে, জুমআর পরে যোহরের নিয়তে ৪ রাকআত এহ্তিয়াতী যোহ্র পড়া বিদআত। (আল-আজবিবাতুন নাফেআহ্, আন আসইলাতি লাজনাতি মাসজিদিল জামেআহ্, মুহাদ্দিস আলবানী ৭৪পৃ:, মু’জামুল বিদা’ ১২০, ৩২৭পৃ:) যেমন বিদআত রমযানের শেষ জুমআকে জুমআতুল বিদা নাম দিয়ে কোন খাস মসজিদে ঐ জুমুআহ পড়তে যাওয়া।
(সংগৃহীত)